যৌবন জীবন page 2

▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী 

সন্তান মায়ের স্তনবৃন্ত চুষে দুগ্ধপান করে। মিলনের পূর্বে স্ত্রীর স্তনবৃন্ত চোষণ করা কি স্বামীর জন্য বৈধ? পরন্ত অসাবধানতায় যদি পেতে দুধ চলে যায়, তাহলে কি স্ত্রী মায়ের মত হারাম হয়ে যাবে?

স্বামীর জন্য বৈধ তার স্ত্রীর স্তনবৃন্ত চোষণ করে উভয়ের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করা। সে ক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর দুধ তার পেটে চলে যায়, তাহলে তাতে কোন প্রকার ক্ষতি হয় না এবং স্ত্রী তার মা হয়ে যায় না। কারণ দুধ পানের মাধ্যমে হারাম হওয়ার যে সব শর্ত আছে, তা হলঃ
১। দুই বছর বয়সের মধ্যে দুধ পান করতে হবে। সুতরাং তার পরে বড় অবস্থায় দুধ পান করলে হারাম হবে না।
২। পাঁচবার পান করতে হবে।
সুতরাং ২/৪ বার পান করলে কোন প্রভাব পড়ে না। আর বড় অবস্থায় ৫ বারের বেশী পান করলেও কোন ক্ষতি হয় না। (ইবনে বায, ইবনে উষাইমীন)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

শিঙ্গারের সময় স্তনবৃন্ত চুষতে গিয়ে স্ত্রীর দুধ যদি স্বামীর পেতে চলে যায়, তাহলে স্ত্রী কি হারাম হয়ে যাবে?

রতিক্রীড়ার সময় স্ত্রীর দুধ যদি স্বামীর পেটে চলে যায়, তাহলে স্ত্রী স্বামীর মা হয়ে যাবে না। কারণ দুধ পান করিয়ে “মা” হওয়ার দুটি শর্ত আছেঃ
(এক) দুধ পান যেন বিভিন্ন সময়ে পাঁচবার হয়।
(দুই) দুধপান যেন দুধপানের বয়সের ভিতরে হয়। আর তা হল দুই বৎসর বয়সের ভিতরে। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন,
“আমি তো মানুষকে তার পিতা মাতার প্রতি সদাচারনের নির্দেশ দিয়েছি। জননী কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে এবং তার স্তন্যপান ছাড়াতে দু বছর অতিবাহিত হয়।” (লুকমানঃ ১৪)
জননীগণ তাঁদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে; যদি কেউ দুধ পান করার সময় পূর্ণ করতে চায়। (বাকারাহঃ ২৩৩)
সুতরাং দু'বছর বয়সের পরে দুধপান করলে মা প্রমাণিত হবে না। আর ‘মা’ প্রমাণিত না হলে স্ত্রী হারাম হবে না।  (ইবনে উষাইমীন)
▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

সহবাসের সময় আমার স্বামী প্রবল উত্তেজনাবসতঃ এমন অনেক অশালীন কথা বলে, যে কথা অন্য সময় বলে না। অনেক সময় সে সব বলে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাতে কি তার পাপ হবে?

স্বামী স্ত্রীর মাঝে যে যৌনতা করা হয়, সেটাই অন্যের সাথে করা অশালীনতা অসভ্যতা। সুতরাং আপসের সঙ্গম বৈধ হলে প্রবল উত্তেজনার পূর্বে তৃপ্তি গ্রহণ করতে ঐ শ্রেণীর কোন কথা বলা দূষণীয় নয়। তবে তা না বললে যদি চলে, তাহলে ত্যাগ করাই উত্তম। (মুহাম্মাদ স্বালেহ আল মুনাজ্জিদ)
▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

সন্তান প্রসবের পর কখন মিলন বৈধ হয়।

সন্তান প্রসবের পর যখন রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, তখন থেকেই মিলন বৈধ। স্রাব অব্যাহত থাকলে ৪০ দিন পর্যন্ত অবৈধ। ৪০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে স্রাব থাকলেও মিলন বৈধ।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

স্বামী যদি কুশ্রী হয়, তাহলে স্ত্রী স্বামী সহবাসের সময় কোন সুশ্রী যুবককে এবং স্ত্রী যদি কুশ্রী হয়, তাহলে স্বামী স্ত্রী সহবাসের সময় কোন সুশ্রী যুবতীকে কল্পনায় এনে তৃপ্তি নিতে পারে কি?

এই শ্রেণীর কল্পিত পরপুরুষ বা পরস্ত্রির সহবাস এক প্রকার ব্যভিচার। সহবাসের সময় স্ত্রীর জন্য বৈধ নয় অন্য কোন সুন্দর অন্য সুস্বাস্থ্যবান পুরুষকে কল্পনা করা এবং স্বামীর জন্যও বৈধ নয় অন্য সুন্দরী সুস্বাস্থ্যবতী যুবতীকে কল্পনা করা। বৈধ নয়, পরপুরুষ বা পরস্ত্রীর নাম নিয়ে উভয়ের তৃপ্তি নেওয়া অথবা উত্তেজনা বৃদ্ধি করা। মনে মনে যাকে ভালবাসে, তার সাথে মিলন করছে খেয়াল করা। উলামাগন বলেন, “ যদি কেউ এক গ্লাস পানি মুখে নিয়েও কল্পনা করে যে, সে মদ খাচ্ছে, তাহলে তা পান করা হারাম।” ৬৪৭ (মাদখাল ২/১৯৪, ফুরু ৩/৫১, ত্বারহুত তাষবীর ২/১৯)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

একাধিক স্ত্রীর মাঝে সমতা ইনসাফ বজায় রাখা ওয়াজেব। রাত্রিবাস সবার সাথে সমান ভাবে করলেও মিলন সকলের সাথে হয়ে ওঠে না। তাতে কি আমি গোনাহগার হব?

একাধিক স্ত্রীর মাঝে ভালবাসাকে যেমন সমানভাবে ভাগ করে বণ্টন করা যায় না, তেমনি আকর্ষণ ও মিলনও সবার সাথে সমান হওয়া জরুরী নয়। তবে নিজের পক্ষ থেকে অনিচ্ছা প্রকাশ করা উচিৎ নয়। কোন স্ত্রী না চাইলে ভিন্ন কথা। কিন্তু চাইলে তার হক আদায় করা উচিৎ এবং সে ক্ষেত্রে সকলের মাঝে সমতা বজায় রাখা কর্তব্য।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

ইফতারের সময় হয়ে গেলে কিছু না খাওয়ার আগে কি স্বামী স্ত্রী মিলন করতে পারে?

যদি স্বামী এতই ধৈর্যহারা হয়, তাহলে তা অবৈধ বলা যাবে না। যেহেতু সে সময় তাঁদের জন্য তা বৈধ। অবশ্য সুন্নত হল খেজুর পানি দিয়ে ইফতার করা। কিন্তু সেই সুন্নত পালনে কেউ যদি আধৈর্য হয়, তাহলে পেটের ক্ষুধা মিটাবার আগে যৌন ক্ষুধা মিটাবার দরজা উন্মুক্ত আছে। ইবনে উমার (রাঃ) কোন কোন দিন সহবাস দ্বারা ইফতার করতেন বলে বর্ণিত আছে।  (ত্বারাবানী)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

রোযা রেখে মহিলা যদি মহিলা ডাক্তার না পেয়ে পুরুষ ডাক্তারের কাছে এমন রোগ দেখাতে যায়, যাতে ডাক্তার তার লজ্জাস্থানে হাত প্রবেশ করতে বাধ্য হয়। তাহলে তাতে তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে কি?

ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তা করলে তাতে তার রোযা ভাঙ্গবে না। বরং স্বামীও যদি খেলার ছলে নিজ আঙ্গুল প্রবেশ করায়, তবুও তার রোযা ভাঙ্গবে না। যেহেতু তার দলীল নেই। আর তা সহবাসও নয়।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

বৃহস্পতিবার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে নফল রোযা রেখেছিলাম। কিন্তু তিনি আসার পর অধৈর্য হয়ে আমার সাথে মিলনে লিপ্ত হয়ে যান। এতে কি কাফফারা দিতে হবে?

নফল রোযা রাখার পর ইচ্ছা করে ভেঙ্গে ফেললে কোন ক্ষতি হয় না। তা কাযা করাও ওয়াজেব নয়। সুতরাং আপনার স্বামীর উক্ত আচরণে কাফফারা ওয়াজেব নয়।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

রমযানের কাযা রোযা রেখেছিলাম। কিন্তু একদিন আমার স্বামী অধৈর্য হয়ে আমার সাথে মিলনে লিপ্ত হয়ে যান। এতে কি কাফফারা দিতে হবে?

ফরয রোযা কাযা করার সময় তা ভেঙ্গে ফেলা বৈধ নয়। সুতরাং আপনার স্বামীর উক্ত আচরণ সঠিক নয়। তার উচিৎ, আল্লাহ্‌র কাছে তওবা করা। অবশ্য কাফফারা ওয়াজেব নয়। কারণ, সে কাজ রমযানের বাইরে তাই।
----
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা নিষেধ, কিন্তু স্ত্রী সহবাস বৈধ কি?

কিবলামুখী হয়ে স্বামী স্ত্রী সহবাস করা অবৈধ এমন কোন দলীল নেই। যারা স্ত্রী সহবাসকে প্রস্রাব পায়খানা করার মতো মনে করেন, তারা অবশ্য তা অবৈধ বলেন। আর যাঁদের নিকট ঘরের ভিতর কিবলামুখে প্রস্রাব পায়খানা বৈধ, তাঁদের নিকট স্ত্রী সহবাসও বৈধ। আল্লাহু আলাম।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

সহবাস চলাকালে নিজেদের লজ্জাস্থান দেখলে কি কোন ক্ষতি আছে?

সহবাস চলাকালে নিজেদের লজ্জাস্থান দেখলে কোন ক্ষতি নেই। তা দেখলে কোন পাপও হয় না এবং চোখেরও কোন ক্ষতি হয় না। “তিনি আমার লজ্জাস্থান দেখেননি এবং আমি তার লজ্জাস্থান দেখিনি”-বলে মা আয়েশা (রঃ)র প্রচলিত উক্তি সহীহ নয়।  
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

সহবাস চলাকালে কথা বললে কি কোন ক্ষতি হয়?

সহবাস চলাকালে স্বামী স্ত্রীতে কথা বললে কোন ক্ষতি নেই। সে সময় কথা বললে সন্তান বোবা হয়---এ ধারনা সঠিক নয়। (তুহফাতুল আরুস দ্রঃ)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

গর্ভাবস্থায় সঙ্গম বৈধ কি?

শরীয়তে গভাবস্থায় সঙ্গম নিষিদ্ধ নয়। ভ্রূণের কোন ক্ষতির আশংকা না থাকলে গর্ভাবস্থায় সঙ্গমে দোষ নেই। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে পেটে চাপ না পড়ে। অবশ্য শেষের দিকে না করাই উচিৎ। যেহেতু বলা হয় যে, তাতে ব্যাকটেরিয়াগত কোন ক্ষতির আশংকা থাকে। যেমন যে মহিলার গর্ভপাত হয়, তার সাথে প্রথম তিন মাস সঙ্গম না করতে ডাক্তারগন উপদেশ দিয়ে থাকেন।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

মিলন তৃপ্তির কথা স্বামী কি তার বন্ধুদের কাছে এবং স্ত্রী কি তার বান্ধবীদের কাছে বলতে পারে?

মিলন তৃপ্তির কথা স্বামীর তার বন্ধুদের কাছে এবং স্ত্রী তার বান্ধবীদের কাছে বলতে পারে না, বিশেষ করে যদি তারা অবিবাহিত হয়। মজাকছলে হলেও সে কথা কারো কাছে বলা বৈধ নয়।
আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন আল্লাহ্‌র নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ সেই ব্যাক্তি হবে, যে স্ত্রীর সাথে মিলন করে এবং স্ত্রী তার সঙ্গে মিলন করে। অতঃপর সে তার (স্ত্রীর) গোপন কথা প্রকাশ করে দেয়।” (মুসলিম)
আসমা বিন্তে ইয়াযিদ (রঃ) বলেন, একদা আমি আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) এর নিকট ছিলাম, আর তার সেখানে অনেক পুরুষ ও মহিলা বসেছিল। তিনি বললেন, “সম্ভবতঃ কোন পুরুষ নিজ স্ত্রীর সাথে যা করে, তা (অপরের কাছে) বলে থাকে এবং সম্ভবতঃ কোন মহিলা নিজ স্বামীর সাথে যা করে, তা (অপরের নিকট) বলে থাকে?” এ কথা শুনে মজলিসের সবাই কোন উত্তর না দিয়ে চুপ থেকে গেল। আমি বললাম, ‘জী হ্যাঁ। আল্লাহ্‌র কসম, হে আল্লাহ্‌র রাসুল! মহিলারা তা বলে থাকে এবং পুরুষেরাও তা বলে থাকে।’ অতঃপর তিনি বললেন, “তোমরা এরূপ করো না। যেহেতু এমন ব্যক্তি তো সেই শয়তানের মত, যে কোন নারী শয়তানকে রাস্তায় পেয়ে সঙ্গমে করতে লাগে, আর লোকেরা তার দিকে চেয়ে চেয়ে দেখে।”  (আহমাদ, ইবনে আবী শাইবাহ, আবূ দাঊদ, বাইহাকী প্রভৃতি, আদাবুয যিফাফ ১৪৩ পৃঃ)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

গোসল করার মত পানি নেই জেনেও কি মিলন করা বৈধ?

গোসল করার মত পানি নেই জেনেও মিলন অবৈধ নয়। মিলনের সময় মিলন বৈধ। নামাযের সময় পানি না পাওয়া গেলে যথানিয়মে তায়াম্মুম করে নামাজ বৈধ। আবু যার পানি না থাকা সত্ত্বেও স্ত্রী মিলন করলে নবী (সঃ) তাকে তায়াম্মুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “দশ বছর যাবত পানি না পাওয়া গেলে মুসলিমের ওযুর উপকরণ হল পাক মাটি। পানি পাওয়া গেলে গোসল করে নাও।” ৬৫২(আহমাদ, আবূ দাঊদ ৩৩৩ নং)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

হাদিসে আছে, “যদি কোন ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে এবং সে না আসে, অতঃপর সে (স্বামী) রাগাম্বিত অবস্থায় রাত কাটায়, তাহলে ফিরিশতাগণ তাকে সকাল অবধি অভিশম্পাত করতে থাকেন।” কিন্তু বাসায় পানি না থাকার ফলে ফজরের নামাজ নষ্ট হওয়ার ভয়ে যদি আমি মিলনে রাজি না হই, তাহলে তাতেও কি আমি অভিশপ্তা হব?

পানি না থাকলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়া যাবে। সুতরাং সেই ওজরে স্বামীর যৌন সুখে বাঁধা দেয়া উচিৎ নয়। যেহেতু শরীয়তে এমন বিধান নেই যে পানি না থাকলে তোমরা নাপাক হয়ো না। বরং বিধান হল, “হে বিশ্বাসিগন! তোমরা নেশার অবস্থায় নামাযের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা কি বলছ, সেটা বুঝতে পার এবং অপবিত্র অবস্থায়ও নয়, যদি তোমরা পথচারী না হও, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর। অথবা যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ পায়খানা (শৌচস্থান) হতে আসে অথবা অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর; (তা) মুখে ও হাতে বুলিয়ে নেবে। নিশ্চয় আল্লাহ পরম মার্জনাকারী, অত্যান্ত ক্ষমাশীল।” (সূরা নিসা ৪৩)
“হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর। আর তোমরা যদি অপবিত্র থাক, তাহলে বিশেষভাবে (গোসল করে) পবিত্র হও। যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব পায়খানা করে আগমন করে, অথবা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর এবং পানি না পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর; তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাসাহ কর। আল্লাহ তোমাদেরকে কোন প্রকার কষ্ট দিতে চান না, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।” (মায়িদাহঃ ৬)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

স্বামীর যৌন সুখে বাঁধা দেওয়া অথবা মিলন না দিয়ে তাকে রাগান্বিত করা অভিশাপের কাজ জানি। কিন্তু সে যদি অবৈধ মিলন প্রার্থনা করে এবং তাতে রাজি না হই, তাহলেও কি অভিশপ্তা হব ?

স্বামী যদি অবৈধ মিলন চায় এবং তাকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে যদি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন বা তার অবাধ্যচরণ হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে অভিশাপ আসার কোন প্রশ্নই আসে না। বরং “আল্লাহ্‌র অবাধ্য হয়ে কোন সৃষ্টির বাধ্য হওয়া যাবে না।” (আহমাদ, হাকেম, মিশকাত ৩৬৯৬ নং) সুতরাং স্বামী যদি রমযানের দিনে অথবা মাসিক অবস্থায় মিলন চায় অথবা পায়খানার দ্বারে সঙ্গম করতে চায়, তাহলে স্ত্রীর তাতে সম্মত হওয়া বৈধ নয়। তাতে সে রাগারাগি করলেও সে রাগ তার অন্যায়। সে স্বামী একজন যালেম। আর স্ত্রীর উচিৎ, যালেম স্বামীর সাহায্য করা। একদা রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেন, “তোমার ভাইকে সাহায্য কর, সে অত্যাচারী হোক বা অত্যাচারিত।” আনাস (রঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহ্‌র রাসুল! অত্যাচারিত কে সাহায্য করার বিষয়টি তো বুঝলাম; কিন্তু অত্যাচারীকে কিভাবে সাহায্য করব?’ তিনি বললেন, “তুমি তাকে অত্যাচার করা হতে বাঁধা দেবে, তাহলেই তাকে সাহায্য করা হবে।” (বুখারী)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

আমরা নতুন বর কনে। ইসলামের বিধান মানার ব্যাপারেও আমাদেরকে নতুন বলতে পারেন। আমরা জানতে চাই, আমাদের প্রেমকেলিতে কোন সময় গোসল করা ফরয হয় এবং কোন সময় হয় না।

স্বামী স্ত্রীর যৌন জীবনে বিভিন্ন অবস্থা হতে পারে এবং সেই অবস্থা অনুযায়ী বলা যাবে, কখন গোসল ফরয এবং কখন তা ফরয নয়। স্পর্শ, চুম্বন দংশন, মর্দন, প্রচাপন ইত্যাদিড় ক্ষেত্রে যদি প্রস্রাবদ্বার থেকে আঠালো তরল পদার্থ বের হয়, তাহলে তাতে গোসল ফরয নয়। তাতে ওযু নষ্ট হয়ে যায়। কাপড়ে লাগলে পানির ছিটা দিয়ে পবিত্র করতে হয় এবং প্রস্রাবদ্বার ধুতে হয়।
কিন্তু প্রচাপনের সময় প্রবল উত্তেজনায় যদি বীর্যপাত হয়ে যায়, তাহলে গোসল ফরয হয়ে যায়।
পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ (সুপারি) যোনিপথে প্রবেশ করলেই উভয়ের জন্য গোসল ফরয হয়ে যায়। তাতে বীর্যপাত হোক, চাহে না হোক।
যোনিপথের বাইরে স্ত্রী দেহের উপরে বা তার হাতে বীর্যপাত হলে কেবল স্বামীর উপর গোসল ফরয, স্ত্রীর উপর নয়। অবশ্য সে প্রেম কেলিতে যদি স্ত্রীর বীর্যপাত না হয় তাহলে। মত কথা, বীর্যপাত গোসল ফরয হওয়ার একটি কারণ।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

সঙ্গমে লিপ্ত অবস্থায় কলিংবেল বেজে উঠায় উঠে গিয়ে দরজা খুলি এবং তার পর আর সুযোগ হয়নি এবং আমাদের বীর্যপাতও হয়নি। এতে কি গোসল জরুরী?

সঙ্গমে লিপ্ত হলেই এবং লিঙ্গাগ্র (সুপারি) যোনিপথে প্রবেশ করালেই গোসল ফরয। তাতে বীর্যপাত হোক বা না হোক।
----

▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

বীর্যপাত হলে গোসল ফরয। লিঙ্গাগ্র স্ত্রীলিঙ্গে প্রবেশ করলে এবং বীর্যপাত না হলেও গোসল ফরয। কিন্তু নিরোধ ব্যবহার করে প্রবেশ করালে এবং বীর্যপাত না হলে কি গোসল ফরয ?

মহানবী (সঃ) বলেছেন, “যখন স্বামী তার স্ত্রীর চার শাখা (দুই হাত দুই পায়ের) ফাকে বসবে এবং লিঙ্গে লিঙ্গে স্পর্শ করবে, তখন গোসল ওয়াজেব হয়ে যাবে। (মুসলিম ৩৪৯ নং) নিরোধ ব্যবহার করে লিঙ্গে লিঙ্গে স্পর্শ না হলেও যেহেতু প্রবেশ করিয়ে তাতে যৌনতৃপ্তি অর্জন হয়, সেহেতু গোসল করতে হবে।”
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

আমি একজন বিধবা যুবতী। অনেক সময় স্বপ্নে দেখি, আমি পূর্ণ তৃপ্তির সাথে সহবাস করছি। কিন্তু ঘুম ভাঙবার পর শরমগাহে কোন অতিরিক্ত তরল পদার্থ লক্ষ্য করি না। এতে কি আমার জন্য গোসল ফরয হবে?

শরমগাহে বীর্য লক্ষ্য না করলে গোসল ফরয নয়।  (ইবনে উসাইমীন, মুমতে ১/২৩৪) যুবক ও যদি স্বপ্নে সহবাস করে এবং ঘুমিয়ে উঠে বীর্য না দেখে, তাহলে গোসল ফরয নয়। যেমন ঘুমিয়ে উঠে কাপড়ে বীর্য দেখলে এবং স্বপ্নদোষ হওয়ার কথা মনে না থাকলেও গোসল ফরয।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

সহবাসের পর সত্বর গোসল করা কি জরুরী?

সহবাসের পর সত্বর গোসল করে নেওয়া উত্তম। নচেৎ ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাছাড়া হটাৎ এমন প্রয়োজনও পড়তে পারে, যাতে গোসল করা জরুরী। অবশ্য নিশ্চিন্ত হলে ঘুমোবার আগে অথবা কাজকর্ম বা পানাহার করার আগে ওযু করে নেওয়া মুস্তাহাব।  (বুখারী ৩৮৩, মুসলিম ৩০৫-৩০৬ নং)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

স্বামী সহবাসের পর গোসল করার পূর্বে মহিলার জন্য কি ঘর সংসারের কাজকর্ম ও রান্না-বান্না করা বৈধ নয়?

স্বামী সহবাসের পর গোসল করার পূর্বে মহিলার জন্য ঘর সংসারের কাজকর্ম ও রান্না-বান্না করা অবৈধ নয়। যা অবৈধ, তা হল, নামায, কা’বা-ঘরের তওয়াফ, মসজিদে অবস্থান, কুরআন স্পর্শ ও তিলাওয়াত। এ ছাড়া অন্যান্য কাজ বৈধ।
একদা আবূ হুরাইরা এর সাথে মহানবী (সঃ) এর মদ্বীনার এক পথে দেখা হল। সে সময় আবূ হুরায়রা অপবিত্রাবস্থায় ছিলেন। তিনি সরে গিয়ে গোসল করে এলেন। নবী (সঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথায় গিয়েছিলে আবূ হুরায়রা!” তিনি বললেন, ‘আমি অপবিত্র ছিলাম। তাই সেই অবস্থায় আপনার সাথে বসাটাকে অপছন্দ করলাম।’ নবী (সঃ) বললেন, “সুবহানাল্লাহ! মু’মিন অপবিত্র হয় না।” (বুখারী ২৭৯, মুসলিম ৩৭১ নং) অর্থাৎ মুসলিম অভ্যান্তরিকভাবে অপবিত্র হলেও বাহ্যিকভাবে সে অপবিত্র হয় না বা অস্পৃশ্য হয়ে যায় না।
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

গোসলের পর প্রস্রাব দ্বার থেকে বীর্য বের হতে দেখলে কি পুনরায় গোসল করতে হবে?

গোসলের পর প্রস্রাবদ্বারে থেকে বীর্য বের হলে তা উত্তেজনাবশতঃ নয়, বরং তা কোনভাবে ভিতরে আটকে থাকা বীর্য। সুতরাং তাতে পুনরায় গোসল করা ওয়াজেব নয়। তা প্রস্রাবের মতো, তা পুনরায় ধুয়ে ফেলে ওযু করলেই যথেষ্ট।  (ইবনে বায)
 ▪️যৌন জীবন  আবদুল হামীদ ফাইযী

মিলনের পর বাথরুমে প্রস্রাব করতে গিয়ে দেখি মাসিক শুরু হয়ে গেছে। তাহলে আমাকে কি মিলনের গোসল করতে হবে?

স্বামী সহবাসের পর মাসিক শুরু হয়ে গেলে গোসল ফরয নয়। কারণ সে ফরয পালনে কোন লাভও নেই। সে গোসলের পর সে পবিত্র হবে না। সুতরাং মাসিক বন্ধ হওয়ার পর গোসল ফরয। কিন্তু মাসিক অবস্থায় যদি কুরআন মুখস্থ পড়তে হয়, তাহলে তাঁকে গোসল করতে হবে। কারণ বীর্যপাত ঘটিত অপবিত্রতায় সঠিক মতে কুরআন পড়া বৈধ নয়।  (শায়খ সা’দ আল-হুমাইদ)

                                   ......page 1  এ ফিরে যান
               জাযাকাল্লাহ খায়ের
  আপনি এখান থেকে উপকৃত পেলে আমাকে দোয়া দিবেন